অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : করেনা মহামারি ও রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আকরিক লোহার বৈশ্বিক উত্তোলন কমেছে ২ শতাংশ। এমন অবস্থায় দেশে আবিষ্কৃত লোহার দুটি খনি সম্ভাবনা দেখাচ্ছে নতুন দিগন্তের। খনি দুটি থেকে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের নতুন দ্বারও উন্মোচিত হতে যাচ্ছে। একুশে টেলিভিশনকে এমন আশার কথা শোনালেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু।
জ্বালানির পাশাপাশি অন্যান্য খনিজ সম্পদের সংকটেও পড়েছে বিশ্ব। এর কারণ রাশিয়ার ওপর বিভিন্ন দেশের বিধি-নিষেধ। আর এ সংকট বিশ্বকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করে। নিজ দেশে খনিজ অনুসন্ধান ও উত্তোলন জোরদার করেছে সবাই।
গ্লোবাল ডাটার তথ্য বলছে, চীন, রাশিয়া ও ইউক্রেনে আকরিক লোহার উত্তোলন নামবে ৩৮ কোটি ২৮ লাখ টনে। গত বছর এসব দেশ উত্তোলন করেছিল ৪৫ কোটি ৮৯ লাখ টন।
শুধু রাশিয়ায় এ ধাতুটির উত্তোলন কমতে পারে ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ। আর ইউক্রেনে কমবে ৪৮ দশমিক ৬ শতাংশ।
তবে অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, ভারত ও কানাডার উত্তোলন ১ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে ১৬৭ কোটি ৫০ লাখ টনে উন্নীত হবে বলে জানাচ্ছে গ্লোবাল ডাটা।
এমন অবস্থায় দেশের দিনাজপুরের হাকিমপুর ও কুতুবপুরের আবিষ্কৃত লোহার খনি দুটি আশার আলো দেখাচ্ছে। বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের প্রাথমিক জরিপের তথ্য বলছে দিনাজপুরের হাকিমপুরের ৫ বর্গ বিলোমিটারের খনিতে মজুত রয়েছে ৬৫০ মিলিয়ন টন আকরিক লোহা।
আরও সুনির্দিষ্ট জরিপের জন্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে। যারা টু-ডি ও থ্রি-ডি জরিপ পরিচালনা করে জানাবে খনির আয়তন, মোট মজুত এবং কতটুকু গভীর থেকে লোহা উত্তোলন করা যাবে।
এরই মধ্যে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের জরিপের কাজ শুরু হয়েছে। ৬ থেকে ৭ মাসের মধ্যে রিপোর্ট পাওয়া যাবে বলে আশা বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর।
বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেন, “কনসালটেন্ট হায়ার করেছি, সেই কনসালটেন্ট ওখানে ফিজিবিলিটি দেখবে। কি পরিমাণ উঠানো যাবে, আর মোট রিজার্ভের পরিমাণ তারা যাচাই-বাছাই করবে। এই রিপোর্ট তৈরি করতে ৬ থেকে ৭ মাস লাগবে।”
রিপোর্ট পাওয়ার পর দ্রুততম সময়ে উত্তোলন শুরু করা হবে বলেও জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেন, “যত দ্রুত উত্তোলন করা যায়। কনসালটেন্টের পর্যবেক্ষণ ও রিপোর্ট আসতে যে দেরি সেটা তো মানতে হবে।”
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব হতে পারে এই আকরিক লোহা।
তিনি আরও বলেন, “আকরিক লোহা নিয়ে বাংলাদেশ খুব কম ইন্ডাস্ট্রি আছে। যদি বাংলাদেশে ইন্ডাস্ট্রি গ্রো করে তাহলে স্টিল ইন্ডাস্ট্রি ডেভেলপ করবে। সেক্ষেত্রে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বাকিটা এক্সপোর্ট করা যাবে।”
দেশজ আকরিক লৌহ সম্পদ ব্যবহারের নীতিমালা তৈরির কাজ চলছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আরও খনিজ সম্পদ অনুসন্ধান চালাচ্ছে সরকার।
Leave a Reply